রবিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২৪

মৃত পৃথিবীর ঘোষণা

মৃত পৃথিবীর ঘোষণা নীল তারা কল্পনার ছুরি চালায় মানচিত্রের বুকে, রক্তের রেখায় আঁকে নতুন সীমানা, আকাশে বন্দুকের গর্জন, মাটিতে বোমার আওয়াজ, এই পৃথিবীর প্রতিটি কোণে আজ মৃত্যুর প্রার্থনা। শিশুরা জন্মায় না আর আলোতে, তাদের শ্বাসে ভরে ওঠে বিষের ধোঁয়া, যুদ্ধের কোলাহলে চাপা পড়ে কান্না— তারা জানে না, ঘুম কেমন স্বপ্নহীন হতে পারে। নারীরা শূন্য চোখে তাকিয়ে থাকে পোড়া গৃহের দিকে, তাদের বুকের দুধ শুকিয়ে গেছে আগুনে— এখানে জীবনের বদলে মৃত্যুই একমাত্র উত্তর, তাদের কোল জুড়ে শুধুই নিথর শরীর। পুরুষেরা হারায় যুদ্ধের ময়দানে, তাদের হাত থেকে ফসকে যায় অস্তিত্বের শেষ দাগ, তাদের নাম লেখা হয় না আর কোনো ইতিহাসে, তারা হয়ে ওঠে একেকটি সংখ্যা, অদৃশ্য অস্তিত্ব। তারা বসেছে সভায়, হিসাব কষছে লাশের, তাদের চোখে নেই কোনো অনুশোচনা, তাদের ভাষায় নেই কোনো মানবতা। তারা জানে, যুদ্ধ মানে মুনাফা—আর মৃত্যু মানে ক্ষমতা। এই পৃথিবী আজ বসবাসের জন্য অযোগ্য, তারা বুনেছে ধ্বংসের জাল— তারা শিখিয়েছে, কিভাবে বাঁচতে হয় মিথ্যার ছায়ায়, তারা জানে না কিভাবে মানুষ বাঁচে সত্যের আলোয়। পৃথিবীর নদী আজ বিষাক্ত, মাটি আজ মৃত, আকাশ কালো ধোঁয়ায় ঢাকা, জীবনের প্রতিটি স্পন্দন আজ থেমে যায়, তারা এই পৃথিবীকে পরিণত করেছে এক শ্মশানে। আর কোনো আলো নেই— কেবল আগুন, কেবল মৃত্যু। তারা জানে না, এই পৃথিবী তাদেরও নয়, তারা জানে না, ধ্বংসের শেষে তাদেরও পতন অনিবার্য। তারা এখনো খেলছে যুদ্ধের খেলায়, আমরা শুধু দেখছি, নির্বাক, অনড়— এই পৃথিবী আজ আর পৃথিবী নয়, এটা কেবল ধ্বংসের এক অন্ধকার মঞ্চ। তারা জানে না, এখানে আর কোনো গান বাজবে না, তারা জানে না, এই মাটির বুক থেকে আর কোনো বৃক্ষ জন্মাবে না। তারা জানে না, আমরা সবাই হারিয়ে গেছি— এই মৃত পৃথিবীর সঙ্গে, চিরতরে।

সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪

অধরা

অধরা নীল তোমার ছবি আঁইকাছি মনের ক্যানভাসে, আলো-ছায়ার মইধ্যেও তুমি বড়ই অস্পষ্ট। ভালোবাসা দিয়াছিতো অনেক, পাই নাই তো কিছুই ফেরত, হৃদয়ের গভীরে শুধু সঞ্চিত হইছে ব্যথা বেদনা। তোমার নাম বাতাসে ডাকে অস্পষ্ট আওয়াজে, ঐদিকে তোমার হাসির সরসর শব্দ শুনা যায় মরীচিকার ভাঙ্গনে। ভালোবাসার ছোঁয়া যেন কচু পাতায় বৃষ্টির ফোঁটা, স্পর্শ কইরা যায় ঠিকই, শুধু ভিজাইয়া দেয় না। আজীবন প্রেমের মরুভূমিতে আমি একা পথিক হইয়া রইলাম, তবুও তোমারে পাওয়ার আশায় পথ চলি। হৃদয় আঁকরাইয়া ধরছে শূন্যতার সুর, তবুও খুঁজি তোমারে, খুঁজতে হবে চিরকাল।

শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

অধরা

অধরা নীল তোমার ছবি আঁকি মনের ক্যানভাসে, আলো-ছায়ার মাঝে তুমি অস্পষ্ট। ভালোবাসা দিয়েছি, পাইনি তো ফেরত, হৃদয়ের গভীরে সঞ্চিত শুধু ব্যথা। তোমার নামে বাতাস ডাকে, অস্পষ্ট, শুনি তোমার হাসির ঝলক মরীচিকায়। ভালোবাসার ছোঁয়া যেন বৃষ্টির ফোঁটা, স্পর্শ করে যায়, ভিজিয়ে দেয় না। প্রেমের মরুভূমি, আমি একা পথিক, তোমাকে পাওয়ার আশায় পথ চলি। হৃদয় আঁকড়ে ধরে শূন্যতার সুর, তবুও খুঁজি তোমাকে, চিরকাল।

মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪

বিস্মৃতি

বিস্মৃতি 

নীল


বাধা ঘরে আছে সেই চেনা গন্ধ,  

হাত বাড়িয়ে স্পর্শ করি অনুভবের ধূসরতা।  

একাকীত্বের চাদরে জড়িয়ে  

তবুও কেন মনে হয়, আছি আমরা একসাথে।  


মায়াবী সে হাসির খেলা,  

এখন শুধু অবশিষ্ট হাসির ছায়া।  

ভালোবাসার শব্দগুলো মুছে গেছে,  

শুধু নীরবতা ভাসে বাতাসে।  


মনের মাঝে বহে যায় বিষাদের নদী,  

অনুভূতির ক্যানভাসে আঁকি দুজনের বিচ্ছেদ।  

অপেক্ষার প্রহর আর সময়ের সাক্ষী,  

একাকিত্ব যেন বাঁধা আমাদের মাঝে।  


স্মৃতির অলিগলি পেরিয়ে,  

হৃদয়ের পর্দায় ভেসে ওঠে তোমার ছবি।  

আশায় বাঁধা পথ, এখন কেবলি অচেনা লাগে।  

বুধবার, ৩০ আগস্ট, ২০২৩

সন্ধ্যার শোক

সন্ধ্যার শোক

নীল


ভাগ্যের নিষ্ঠুর হাত তার দীপ্তি কেড়ে নিল, কিছু দিনের জমানো স্বপ্ন মিশে গেলো অর্ধ-স্মৃতি কুয়াশাতে। নদীর জলে তার ছায়া আঁকা হয়েছে চিরকাল, গাছের পাতায় তার নাম রাখা হয়েছে চিরকাল। ঠোঁটে তোলা অবেক্ত সব সুর অপূর্ণ রেখে নতুন যাত্রা শুরু, বাতাসের ফিসফিসে রেখে যাওয়া কথা অন্তহীন অন্ধকারে মিলিয়ে গেল। আকাশের ছায়া ঘনিয়ে এসেছে, সময় বাঁধ ভেঙেছে অকাল, সন্ধ্যার নিয়ন লাইটে হাটা হবে না তার, ভেজা হবে না আর বৃষ্টিতে। একটি ফাঁকা শূন্যতা , একটি লেগে থাকা গন্ধ, একটি অপ্রকাশিত আক্ষেপ, থেকে যাবে চিরকাল বর্তমান। সন্ধ্যার শোকে স্তব্ধ হলো মন, স্মৃতির ঝিরিঝিরি বাতাসে শিশিরে না ভেজা গোলাপের মতো একজন চলে গেল অসময়ে আপন মনে।



বুধবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৩

আত্মসন্ধান

আত্মসন্ধান নীল নদীর ধারে গোধলী মাখা সন্ধ্যা, পুরনো সময়ের অনাকাঙ্খিত গল্প ফিরে আসে নদীর জলে। বাড়ির পেছনে আছে অজানা এক কোণা, নদীর খেয়ালি ঢেউয়ের স্পন্দনে তাতে ছুয়েছে জীবন। সেখানে সবুজ ঘাসের আছে গল্প, নদীর আছে কিছু আলাপ, আছে অসীম স্মৃতির অসমাপ্ত কিছু কোলাহল। ফেরিওয়ালা ফিরে আসে সময়ের পারাপারে, স্মৃতির কাঁটা ছোঁয়া তার ব্যস্ত চলাচলে। ফেরি না হওয়া দুঃখগুলো ভাসিয়ে জলের ফেনায়, ফিরে যায় ফেরির বাক্সে বন্ধি মরচে পড়া স্মৃতি নিয়ে, চোখে নিয়ে যায় অজানা কিছু আভাস, বিস্মৃতি দুঃখ ফেরি শেষে ফিরে আর ফিরবেনা, কথায় তার না ফেরার পূর্বাবাস। "কী চাও?" প্রশ্ন করে নির্জন মন। কিছুই বলি না, শুধু রেখেছি চোখ তার চোখে, আরো কিছু অদ্ভুত প্রশ্ন এখনো করা বাকি জীবনকে। বাকি রেখে সেসব ভেতরের দুঃখ, স্মৃতি আর মুচড়ানো স্বপ্ন, সবই ছেড়ে দিয়েছি, নতুন জীবন সঞ্চারের আশায়, পুরোনোকে করেছি বিদায়, তবুও অদ্ভুত আরো কিছু প্রশ্ন থেকে যায়। সন্ধ্যায় গোধোলির নদীর ধারে, চারপাশ এখন অসীম শূন্য, এখানে কোন দুঃখ নেই, আছে শুধু জীবনের অদেখা অসীম রঙ। যদি জানতে চাও - সুখের বাজার কোথায়? তাহলে দেখ নিজেকে, আত্মার অন্তর সবকিছু তে পূর্ণ, শুধু খুঁজে নিতে হয়। জীবনের সকল স্মৃতি, সকল আবেগ, সবই আছে সেখানে, সন্ধ্যায় গোধোলির পরে নদীর তীরে।

মঙ্গলবার, ৯ জুন, ২০২০

অজানা কল্পনা

অজানা কল্পনা
নীলরুবার জন্য

অজানা কল্পনা ছড়িয়ে পড়েছে মনে মস্তিষ্কে,
তোমার ভিতর ডুবে যাচ্ছে, তোমার প্রেমে মাতাল হচ্ছে।
কি ভাবছে, কি চাচ্ছে...
অজানা কল্পনা করেই চলেছে!

যখন রাখবে তোমার হাত এই হাতে,
কি চাইবে আর সে? জান্নাত তো পেয়েছে!
তুমি থাকলে পাশে, কি হবে নিখিল দুনিয়া দিয়ে?
তোমার প্রেম শুধা পিয়ে, হারাবো অজানাতে!

দক্ষিণা বাতাসের যতটা কাছে ফুলের খুশবো,
যতটা কাছে ঠোঁটের নতুন গানের সুর,
নির্ঘুম রাতের যতটা কাছে মনের ভাবনা,
যতটা কাছে বাহুর মাঝে অতৃপ্ত আলিঙ্গন,
স্বপ্ন থাকে যতটা কাছে চোখের দৃষ্টির,
ঠিক ততোটা কাছে থাকবো শুধু তোমার হয়ে।

মন গোপনের যতটা কাছে হৃদয়ের কম্পন,
যতটা কাছে মেঘের থাকে বৃষ্টির ফোঁটাগুলো,
চাঁদ ছাড়া রাতের যতটা কাছে অমাবস্যার আধার,
যতটা কাছে নয়নের মাঝে পেঁয়াজে তোলা কাজল,
দরিয়ার বুকে যতটা কাছে অশান্ত লহরী,
ঠিক ততোটা কাছে থাকবো শুধু তোমার হয়ে।

নীলরুবা থাকে কাছে দিয়েছে হৃদয়ে হৃদয়,
অজানাতে হারাবো দুজন আর কিসের ভয়!