সোমবার, ২৫ মার্চ, ২০১৩

তুমি রাগ করেছ বলে(নীল কাব্য ১৯)


তুমি রাগ করেছ বলে
নীল

গগনে রবি উঠেছে ঠিক কিন্ত কিরণ বিলায়নি,
যা কল্পনাতীত চৈত্রের আগুন লাগা দুপুরে, 
নিলাম্বরে মেঘেরা ছুটেছে ভীষণ বেস্ত হয়ে,
কিন্তু এক বিন্দু জলের দেখা পেলনা তৃষ্ণার্থ বসুধা।
ক্ষিপ্ত গতির ঈশান পবন রুজকার মত আজও ছুটেছে,
তবে তাতে ছিল তপ্ততা।
বৃক্ষ শাখের সবুজ পাতা ঝরেছে অঝরে,
যারা হলুদ বর্ণ ধারণ ছাড়া ত্যাগেনা বৃক্ষ মায়া।
চুপসে গিয়ে কালচে হয়েছে বাগানের ফুলগুলো,
যার তাদের রূপে মাতাল করতো রাত-দিন অভিরত।

ফড়িং এর দল আজ বিকেলেও ছিল,
ছিলনা তাদের পূর্বের ব্যাস্ততা,
করেনি ছুটাছুটি।
নিয়ম করে গোধূলি নেমেছে আজও,
কেমন জানই রক্তের ছাপ ছিল তার গায়ে।
সন্ধ্যার ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক আজ ছিল অচেনা, 
পূর্বের মতো ডাকেনি আজ আধারে।

পূর্ণ চন্দ্র  ছিল গগন জুরে,
তবে চন্দ্রপ্রভা ছিল বিবর্ণ- ফেকাসে। 
আজও নিশি গভীর ছিল আগের মতোই, 
তবে আজ রাতে চোখে স্বপ্ন ছিলনা,
 সুখ ছিলনা দেহের মাঝে,
যেমনটা আমার আগে ছিল তুমি পাশে থাকাতে।

প্রকৃতি আজ নিজেকে লুকিয়েছে আমার থেকে
শুধু তুমি রাগ করেছ বলে আমার সাথে।

বুধবার, ২০ মার্চ, ২০১৩

কষ্ট (নীল কাব্য ১৮)

আমি জানি
নীল

মনে আমার দুঃখ আছে, কেউ জানেনা আমি জানি।
হৃদয় আমার নিথর পাথর, কেউ জানেনা আমি জানি।
আমি জানি,
কেন মন আজও কাঁদে,
পাথর হৃদয় আজও কাপে।

রবির প্রখর কিরণ, নিশিথ শশীর আলো অথবা
হাজার তারার ঝলকানি-
কেন মনকে আর আলোকিত করেনা;
আকশের নীল রং, সাতরঙা ধনুক অথব
পাহাড়ের সবুজ-
কেন হৃদয় পুলকিত করেনা;
পাখির মধুর ডাক, নদীর ডেউয়ের কলকলানি অথবা
শুভ্র কাশের বাতাসে দুলন-
তাকে আর কেন হাসাতে পারেনা;
কেউ জানেনা আমি জানি।

কিসের দুঃখে মন আজ স্বপ্নহীন,
কেন স্বপ্নে লাল শাড়ি পরা সপ্তর্ষি আসেনা আর, 
মেহেদী রাঙ্গা হাত কেন নেয় বুকের উপর,
কেউ জানেনা আমি জানি।

পেঁয়াজের ভাজে কুপির অনলে কাজল ফেলে-
সে কাজলে চোখ রাঙিনো পল্লীবালা মন আর স্বপ্নে দেখেনা। 
কেন তার স্বপ্নে আর আসেনা কোনো স্বপ্ন পরী,
আসে না কোনো মেঘ বালিকা- তা আমি জানি।

বুধবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

সালাম-জব্বার-রফিক-বরকত(নীল কাব্য ১৭)


সালাম-জব্বার-রফিক-বরকত
নীল
“রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই”-ধ্বনিত হয়ছিল সেই বায়ান্নে
বরকতের কানে কে জানি বলেছিল
সালামকে জানি’না কে মন্ত্র পড়িয়েছিল
আর তাই সেই বায়ান্নে আকশে-বাতাসে বাংলার মাটিতে
ধ্বনিত হয়েছিল-“রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই”।
আজ আমি মায়ের ভাষা পেয়েছি আমার কণ্ঠে
দিয়ে বলি সালাম-জব্বার-রফিক-বরকত
এবং নাম না জানা আরও অনেক শহীদকে,
মুছে যায়নি বৃথা যায়নি তোমাদের আত্তাদাম
তার প্রমান আমরা আজও রেখেছি- ধারন করে আছি বুকে।
আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো সেই একুশে ফেব্রুয়ারী
আমরা আজও ভুলিনি- ধারন করে আছি বুকে।

মঙ্গলবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

অসম্মান (নীল কাব্য ১৬)


অসম্মান
নীল

কত প্রাণ দিয়েছি দান
তবু আমি পায়নি সম্মান
আর বার বার ফিরে আসি সেই হায়েনার সামনে
যারা নিয়েছিল প্রাণ খেলেছিল হলি রক্তে
আমি ধরতে পারিনি তাদের
আমি দেখতে পারিনি তাদের ঝুলে থাকা দেহ
যদিও দিয়েছি লক্ষ প্রাণ বলিদান।
আমি ভাবতে পারিনি ভুলে যাবে সব
আমি বুঝতে পারিনি মুছে যাবে রব
কেন আজ স্তব্দ সেই জাগ্রত বাঙালি
নিরবতা ছুয়ে গেছে সকল প্রাণ, কেন?
যদিও দিয়েছি লক্ষ প্রাণ বলিদান
আজ পায়নি সম্মান সেইসব বলিদেয়া প্রাণ।
যেখানে রাজাকার ঘুরে রাজপথে
তাদের যুজ্ঞ স্থান ফাসির মঞ্চ ছেড়ে
তাদের সম্মানে হয় হরতাল
এই সব ভেবে আমি জেনে গেছি
আমি দিতে পারিনি সম্মান
যারা দিয়েছিল ত্রিশ লক্ষ প্রাণ বলিদান।

সোমবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩

মা (নীল কাব্য ১৫)


মা
নীল

তুমি মা তো তারা হয়ে গেছ,
সেখান থেকে আলো ছরাও কতো?
নীল আকাশে তোমার পথ চলা,
আমায় তোমার মনে পরে নাকো?

নেই তুমি মা ঘুম আসে আমার
সকাল বেলা পাখির ডাকে ঘুম ভাঙ্গে না আর
আকাশ থেকে বৃষ্টি যখন আসে
মনেতে শুধু তোমার ছবি ভাসে

তুমা বিনে তপ্ত এ বুক মরু
বুক ফাটে আঘাত পেলেও সরু
মনিকুঠায়  তোমায় আছে আকা
তোমায় ছাড়া জীবন আমার ফাকা

তোমায় পেতে ইচ্ছে হচ্ছে ভিশন
তাই শুনে কি রাগ করেছ এখন?
রাগ করোনা আসছি তোমার কাছে
তারা হয়ে থাকবো তোমার পাশে

আমি পাপ বলছি(নীল কাব্য ১৪)

আমি পাপ বলছি
নীল

হুম, আপনি ঠিক ধরেছেন,
আমি পাপ! আমি পাপ বলছি!
শুনেছি লগ্নে আমার জন্ম হয়নি, তাই আমি পাপ।

অনুমান আপনি ঠিক করেছেন,
জন্মের পরেই মুখেতে আমার মধু নাকি পরেনি, তাই আমি পাপ।

এই ভাবনাটাও ঠিক ভেবেছেন,
জন্মের পরেই কানেতে আজান দেয়নি নাকি কেউ, তাই আমি পাপ।

শেষ বাজিটাও জিতেই গিয়েছেন,
পিত আমার কে আমি আজও খুঁজি, তাই আমি পাপ।
হুম, সত্যি! আমি পাপ বলছি।

বুধবার, ৯ জানুয়ারী, ২০১৩

না পাওয়া স্বাধীনতা (নীল কাব্য ১৩)


না পাওয়া স্বাধীনতা
নীল

আমাকে তোরা স্বাধীনতা দে
শামসুর রাহামানের কবিতায় নয়
নজরুলের বিদ্রুহে নয়
আমাকে সত্যিকারের এক মুষ্টি স্বাধীনতা দে।
যে স্বাধীনতায় আমাকে হতে হবেনা
কাঁটা তারে ঝুলে থাকা ফেলানি,
যে স্বাধীনতায় আমি বিশ্ব জয় করবনা
নুতন আর এক বিশ্বজিৎ হয়ে,
সিমান্তে আমাকে লাশ বানাবেনা যে স্বাধীনতা
আমাকে আমার সিমানা থেকে তুলে নিবেনা যে স্বাধীনতা
আমাকে সেই স্বাধীনতা দে।
আমাকে স্বাধীনতা দে বেঁচে থাকার
যেখানে আমাকে হতে হবে না গুম
সাদা পোশাকের গুণ্ডাদের যাত্রি হতে হবেনা আমাকে
আমাকে হেঙ্কাপ পরা লাশ হয়ে পরে থাকতে হবেনা যে স্বাধীনতায়
আমাকে সেই স্বাধীনতা দে।
আমাকে মুক্ত হবার স্বাধীনতা দে
তোর জটিল অর্থনীতি যেখানে আমাকে খুন করবে না
আবাসনাভাবে আমাকে থাকতে হবেনা ফুটপাতে
খাদ্যাভাবে কুড়িয়ে খেতে হবেনা খাবার ডাস্টবিন থেকে
বস্রহিন হয়ে কাপতে হবেনা আর কোন শিতে যে স্বাধীনতায়
আমাকে সেই স্বাধীনতা দে।
আমাকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাঁচার স্বাধীনতা দে
আমার মাকে লুটে খাওয়া হায়েনার সাথে না মিশার
স্বাধীন বাংলার পতাকা রাজাকারের গাড়িতে না দেখার
রমনার বটমূলের নিরশ্রংশতার সাক্ষী না হওয়ার যে স্বাধীনতা
আমাকে সেই স্বাধীনতা দে।