বুধবার, ২৮ নভেম্বর, ২০১২

তোমার জন্যে বেঁচে থাকা (নীল কাব্য ১১)


তোমার জন্যে বেঁচে থাকা
নীল

জীবনের বেঁচে থাকার সব মুহূর্ত আজ অর্থহীন!
ভাল লাগার সমস্ত কিছু আজ মূল্যহীন!
জানতে চাও কেন?
কারন- আমার বেঁচে থাকা, ভাল লাগা আর
আমার হৃদয় নিগ্রানু ভালবাসা তোমার জন্যে।
তোমার জন্যেই এই জীর্ণ ধরিত্রীতে আমার ছুটে চলা
আর তোমার জন্যেই আমার বেঁচে থাকা।

তুমি আমার বেঁচে থাকার শেষ আশা, আমার অন্তিম আবস;
শুন্য আকশে এক ফালি চাঁদের আলো বা
মরুর বুক শীতল করা ঐ গাছের থেকেও বেশি কিছু তুমি।
তুমি হাজার ঝিনুক খোজে পাওয়া মুক্তার
থেকেও বেশি কিছু আমার কাছে
তুমি আমার আদি-অন্ত উদয়-অস্ত।
মন দরজার খিল আজ তোমার তরে খুলে দিয়েছি,
আত্মার গহীনে পালঙ্ক পেতেছি- অপেক্ষা শুধু তোমারই জন্যে।
মহাকালের যাত্রায় তোমাকে আমার করে নিয়েছি,
জানি তুমি সহ এই তরী তীরে নুঙ্গর করতে সহস্র যাতনা
বিনিদ্র রজনী আর অসংখ্য প্রতিকুল ঢেউ আমাকে পাড়ি দিতে হবে;
এর সব আমি উত্রে যাব শুধু তোমার আশায়;
লক্ষ বাঁধার কাছেও আমি অজেয় হবো শুধু তোমার জন্যে।

আমি বেঁচে আছি শুধু এবং শুধুই তোমার জন্যে,
‘তুমি’ আর ‘আমি’ এই দুইকে সন্ধি করে ‘আমরা’ করার
জন্যে আমার বেঁচে থাকা। এই বেঁচে থাকা
অর্থপূর্ণ হবে তোমার ভালবাসাতে; ঈশ্বরের নামে বলছি-
তোমার একটু চাওয়াতে’ই আমরা উড়তে পাড়ি একসাথে,
বসতে পাড়ি এক ডালে, থাকতে পাড়ি এক নীড়ে,
তুমি আমাকে আর আমি তোমাকে এক ডুরে বাঁধতে পাড়ি ভালবেসে,
শুধু ভালবাসাই থাকবে আমাদের মাঝে যা একান্তই আমাদের।

আমি জানিনা কেন তোমাকে আমার এত প্রয়োজন,
কেন মনের পবন তোমার পালে লাগে, শুধু জানি-
তুমি আমার জন্যে বাঁচবে আমি বাঁচব তোমার জন্যে;
কারন- আমি তোমার জন্যেই বেঁচে আছি আর
তোমার জন্যেই বাঁচব শুধু তোমাকে ভালবাসি বলে।

রবিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১২

নীলাকে যেদিন প্রথম দেখি ( নীল কাব্য ১০)


নীলাকে যেদিন প্রথম দেখি
নীল


প্রতিমার সাজে তুমি এসেছিলে আমার চোখের প্রান্তে
আমার উন্মুক্ত নয়ন জুড়া তোমাকে দেখে অবাক;
বিস্মিত অপলক দৃষ্টি শুধু তোমাতে’ই ছিল।
সৃষ্টির সকল রুপ-লাবণ্যে তুমি যেন আঁকা
অসীম রঙের মিশেলে চিত্রিত তোমার কায়া।
সোনালী ধানের মত তোমার বর্ণিল রূপ
আর রেশম কোমল বদনখানি
আমাকে উন্মাদ করেছে।
হরিণীর মত অপরুপ অক্ষি-যুগলের
খানিক দৃষ্টি তুমি আমার উপর রেখেছিলে
সেই প্রথম বেলাতেই।
তোমার নয়ন তারা কাজল-দিঘির
গভীর জলের মত গভীর
যেখানে বিনাশ্রমে আমাকে ডুভিয়ে নিলে।
অধরে তোমার গুলাপের পাপড়ির ভাজ
গুলাপের মতই রং
যা দেখে তনয়ারা হবে হিংসা-কাতর
আর পুং-অধর আলতোভাবে সঙ্গঘৃষ্ট হতে চাইবে;
আমি’ও এর বেতিক্রম হতে পারিনি।

তোমাকে দেখা সেই প্রথম দিন থেকে
জন্ম নেয়া আবেগ, যা আমি তখন বুঝিনি
তা আজ পবিত্র ভালবাসা হয়ে গেছে
আর তা আজও বেঁচে আছে আমার অন্তরালে।
হয়তোবা ধরা নামের তাসের ঘরে আমি থাকব না
কিন্তু নীলা- তোমার জন্য জন্ম নেয়া ভালবাসা
বেঁচে থাকবে অনন্ত কাল। মহাকালের জাত্রায়
তুমি আমার ভালবাসা আগলে রেখ;
যাতে এই আগলে রাখা ভালবাসা মহাপ্রলয়ের
পরের জগতেও তোমাকে আমার করে দেয়।

তোমাকে নিয়ে ভাবতে ভালবাসি (নীল কাব্য ৯)


তোমাকে নিয়ে ভাবতে ভালবাসি
নীল

অন্তরালে ভাবি তোমার কথা, হৃদয়ে যে তোমারি নাম লিখা;
নিশি আমার কাল হয়ে যায়, বিরাম নায় মনের...
অভিরাম ভেবে চলা নীল আকশের অম্বরি যে ভাবে ভাসে।
মনের উঠুনে শিতল পাটিতে, আর মনের ভিতরের
গাছের ডালে তোমার বাধা পিঁড়ির দুলনাতে বসে
পশ্চিমা পবনে শিতল হয়ে দুলছ তুমি।
অলিক এমন অনেক চিন্তায় সরগরম আমার শির!
অজানা এক সময়ে আমার চিন্তা শেষ হবে,
তখন তোমাকে আর দেখা হবে না। সেই দিনকে
বরনের ডাল আমি সাজিয়ে রেখেছি, তোমাকে নিয়ে
আমার অলিক স্বপ্ন শেষ হলে আমি বরন করে নিব সেই দিনের মৃত্যু।

শুক্রবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১২

তোমাকে ভালবাসব (নীল কাব্য ৮)


তোমাকে ভালবাসব
নীল

তোমাকে আমি কতো ভালোবাসি বলতে পারবনা,
আমার কাছে যদি প্রশ্ন করা হই:
তোমার জন্য আমি কতোখানি ভালবাসা জমা রেখেছি,
আমার হৃদয়ের কতটা জায়গা তোমার নাম লিখা অথবা,
অন্য আরো কোনো প্রশ্ন তোমাকে নিয়ে; আমি উত্তর করতে পারবনা।
আমি শুধু জানি-
আমি তোমাকে ভালোবাসবো
শিশির ভেজা শিতের সকালে,
চৈত্রের তপ্ত দুপুরে,
আশ্বিনের ঝিরি ঝিরি বারি বরষণে।
প্রভাতের দক্ষিণা বাতাসে,
গুধুলি লগণে অস্তিমিত সূর্যের বর্ণিল আলোতে,
ঝিঁঝিঁ ডাকা আধারি নিশিতে-
আমি তোমাকে পরাণ উজাড় করে ভালবাসবো।
প্রকৃতির প্রতি রুপে, প্রতি সাঁজে
আমি তোমাকে দেখব আর, ভালবাসবো।
শুধু বলতে পারবনা আমার ভালবাসার পরিমান।

সোমবার, ৫ নভেম্বর, ২০১২

নীলার কাছে প্রশ্ন (নীল কাব্য ৭)

নীলার কাছে প্রশ্ন
নীল

কেমন আছ? জানি বলবে না।
যদিও বা বল, মনে থাকবে তোমার অকথ্য গালি,
অবজ্ঞার সুরে ছুরে দিবে উত্তর।

কি করছ? জানি এড়িয়ে যাবে।
তোমার সময় হবেনা উত্তর করার মতো,
নাহয় আমাকে উত্তর করা অর্থহীন তোমার কাছে।

ভালো আছে সবাই? জানি এবার তুমি বিরক্তই হবে তুমি।
যদি বিরক্তি না আসে তবে রাগের অনল জলছে নিশ্চিত,
সে অনলে জ্বালাবে আমায় বলে ভাবছ।

আচ্ছা, আমি কি ভুল জানলাম?
কেন আমি এমন ভাবি, অন্য রকম কেন হইনা আমার ভাবনা?
সেও জানতে চাইবে না তুমি জানি।
তোমার হয়তো জানার দরকার নেয়,
তবে আমাকে বলতে হবে- বলতে দাউ:
তবে আজ বলছিনে, তুলে রাখলাম সামনের কোনো এক সময়ের জন্য।

কে ছিলেম আমি,
তোমার মনের কোথায় অধিষ্ঠিত ছিলাম আমি,
তোমার হৃদয়ের কোন জানালায়
আমি আলো হয়ে দিতাম উকি,
তোমার মন মন্দিরে একদিনে কত বার আমি ঘন্টি বাজাতাম-
এর সবকিছু তুমি যেদিন ভুলে যাবে,
সেদিন বলব, সব বলবো আমি গল্প করে।

আমি তোমাকে বলব- তোমাকে না পাওয়ার গল্প,
তোমাকে বক্ষে পেয়েও জড়িয়ে না ধরার কথা আমি বলব।
আমি বলব- কিভাবে তুমি আমাকে জীবিত রেখে হত্যা করেছ,
কিভাবে আমার হৃদয়ের রক্ত ক্ষরণ বেড়েছে তোমার জন্যে,
আমার অস্তি-মজ্জা কিভাবে নিমজ্জিত হয়েছে তোমার অপেক্ষায়,
আমার চোখের দৃষ্টি কেন নিঃশেষ হয়েছে-
তার সবই আমি বলব।

আমি বলব- নরক যন্ত্রণার কথা যা পেয়েছি এই মর্তলুকে,
জীবন আমার কি ভাবে পথের ধুলার মতো উদ্বাস্তু,
কিভাবে আজ আমি বেদুইন যাযাবর-
খুলে বলবো সব কিছু,
বাদ যাবে না একটি বর্ণও।

সব শেষে তোমার কাছে আমার শেষ প্রশ্ন-
নীলা, তুমি শুনবেতো?